নতুন
সরকার, অর্থনৈতিক দৈন্যদশা থেকে মুক্তি মিলবে কি?

গেল ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন
হয়ে গেল। নানান সমালোচনা ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে বিশ্বব্যাপী দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র
করে। ডামি নির্বাচন হিসেবে তকমা পেয়েছে দুনিয়া জুড়ে। কয়েকটি প্রতিবেশী দেশ সরাসরি সমর্থন
দিলেও পশ্চিমা বিশ্ব স্বীকৃতি দেয়নি। শক্তিশালী বিরোধীদল অংশগ্রহণ বিহীন এই নির্বাচন
হয়েছে বিতর্কিত। এই নির্বাচনে কারা বিরোধী দল হিসেবে সংসদে থাকবেন তা সিদ্ধান্ত হয়নি
এখনও। স্বতন্ত্র থেকে ৬১জন নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় পার্টি সমাঝোতার সাত আসনেও জামানত
হারিয়েছে এই নির্বাচনে। ২৬৩টি আসনে দলের প্রার্থী দিয়েছিল। ১১টি আসন পায় শেষ পর্যন্ত।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর জাতীয় পার্টিতে চলছে চরম পর্যায়ের অস্থিরতা।
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল
শুভ রায়কে দলের সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় পার্টি।
নানা নাটকীয়তার পর শেষ মুহূর্তে
এবারের নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেয় জাতীয় পার্টি। তবে, নির্বাচনের আগেই দলের ভঙ্গুর
অবস্থার চিত্র সামনে আসতে থাকে। একে একে প্রার্থীরা ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
আর ভোটের ফলাফলে ভরাডুবি হয় দলটির। এমনকি দলের দুর্গখ্যাত বৃহত্তর রংপুরেও অনেক প্রার্থী
জামানত হারিয়েছেন।
এবার আসল প্রসঙ্গে আসা যাক।
নতুন বছরের শুরুতে প্রাপ্তি ও আশা থাকে সাধারণ মানুষের মাঝে। ফেলে আসা বছরকে ভুলে নতুন
কিছুর পাওয়ার বাসনা থাকে মনে। প্রত্যাসা এই বছর যেন ভালো যায়। ২০২৪ সাল কেমন যাবে?
যারা নিয়মিত খবরাখবর পড়ে তারা আন্দাজ করে নিয়েছে আগেই! এই বছর নতুন করে অনেক ঘটনার
জন্ম দেবে, অর্থনৈতিক সংবাদের প্রাধান্য পাবে পত্রিকার প্রথম পেজে এমনটাই ধারণা গণমাধ্যম
কর্মীদের।
যদি বলা হয় দেশের বাজার পরিস্থিতি
কেমন? নিত্যপণ্যের কী অবস্থা? বাজার পরিস্থিতি কি স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে? না গত বছরের
ন্যায় জানুয়ারি মাসেও একই অবস্থা? উত্তর সোজাসাপটা, পরিবর্তন নাই। রমজান মাস আসতে বাকি
প্রায় দুই মাস। পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে এখনই বাড়তে শুরু করেছে চাল, আটা, ময়দা, ডাল,
ছোলা, ব্রয়লার, চিনি, চিড়াসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম। এজন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডলার
সংকট ও ঋণপত্র খোলা নিয়ে জটিলতাকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।
ধারে আট পণ্য আমদানির সুযোগ
রেখে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ। পণ্যগুলো
হলো ভোজ্যতেল, ছোলা, ডাল, মটর, পেঁয়াজ, মসলা, চিনি ও খেজুর। ডলার সংকটের মধ্যে বৈদেশিক
মুদ্রার রিজার্ভের ক্ষয় রোধে ২০২২ সালের জুলাইয়ে বিলাসবহুল ও অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন পণ্যের
আমদানির ক্ষেত্রে শতভাগ এলসি (ঋণপত্র) মার্জিন আরোপ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত প্রয়োজনীয়
পণ্য আমদানি করতে গিয়ে যাতে ডলারের জোগানে ঘাটতি দেখা না দেয়, সেজন্য এসব পণ্যের আমদানিকে
নিরুৎসাহিত করা হয়।
এর পরও ডলারের সংকট কিংবা রিজার্ভের
ক্ষয় ঠেকানো সম্ভব হয়নি। ব্যাহত হয়েছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের আমদানিও। বাংলাদেশ ব্যাংকের
তথ্য বলছে, সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ২১৭ কোটি ডলারের খাদ্যশস্য আমদানি
করা হয়েছে। যেখানে এর আগের অর্থবছরে এ খাতে আমদানি হয়েছিল ২৬১ কোটি ডলারের। এর মধ্যে
চাল আমদানি ৫৪ কোটি ৬২ লাখ ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৫১ কোটি ৩৮ লাখ ডলারে। আর গম আমদানি
২০৬ কোটি ৪৮ লাখ ডলার থেকে কমে ১৬৫ কোটি ৭৮ লাখ ডলার হয়েছে।
গত অর্থবছরের আমদানির নিম্নমুখিতা
অব্যাহত রয়েছে চলতি অর্থবছরেও। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর)
দেশের আমদানি কমেছে প্রায় ২১ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে আমদানি হয়েছে ২৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার,
যেখানে এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৩২ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারের আমদানি হয়েছিল। এর মধ্যে
গত বছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে ভোগ্যপণ্যের এলসি খোলার পরিমাণ ২৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও এলসি
নিষ্পত্তির পরিমাণ ২২ শতাংশ কমেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ভোগ্যপণ্যের
এলসি খোলা হয়েছে ২৬৪ কোটি ডলারের, যা এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৬৪ কোটি ডলার।
একইভাবে এ সময়ে ভোগ্যপণ্য আমদানি ২৭৬ কোটি ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে, যেখানে এর
আগের অর্থবছরের একই সময়ে নিষ্পত্তি হয়েছিল ৩৫৫ কোটি ডলারের।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আমদানি নিয়ন্ত্রণের
উদ্যোগ সত্ত্বেও দেশে এখনো ডলারের তীব্র সংকট বিদ্যমান। সেই সঙ্গে রিজার্ভের ক্ষয়ও
অব্যাহত রয়েছে। ব্যাংকগুলোয় ডলার মিলছে না বাড়তি দামেও। ফলে অতিজরুরি পণ্যও চাহিদামাফিক
আমদানি করা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়েই আমদানি কমিয়েছেন তারা, যার প্রভাব পড়েছে বাজারে পণ্যের
মজুদের ওপর। এ কারণে সামনে রমজানকে ঘিরে এসব পণ্যের চাহিদা, মজুদ ও সম্ভাব্য জোগানের
মধ্যে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে।
বিভিন্ন চাল পাইকারিতে প্রতি
বস্তায় (৫০ কেজি) ২০০-৩০০ টাকা বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে আটা ও ময়দার।
প্যাকেটজাত আটা কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬৫ টাকায়। খোলা ও প্যাকেটজাত ময়দা
কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা ও ৭০-৭৫ টাকায়। প্রতি কেজি মুগডাল বিক্রি
হচ্ছে মানভেদে ১০০-১৬০ টাকায়। ছোলার দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ৯৫-১১০ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে। ছোট দানার মসুর ডাল কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।
পেঁয়াজ ও রসুনের দামও এখন ঊর্ধ্বমুখী।
বর্তমানে প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ৮০-৯০ টাকায়
বিক্রি হয়েছে। রসুনের দাম ২০ টাকা বেড়ে বর্তমানে মানভেদে ২২০-২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আমদানি হওয়া আদার দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২০০-২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট এলাচের
দাম প্রায় ৬০০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০০-৩৬০০ টাকায়। এদিকে ব্রয়লার মুরগির
দাম কেজিতে প্রায় ২০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ২০০-২১০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরজুড়ে বাংলাদেশের
অর্থনীতির বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির
আশঙ্কা, চলতি অর্থবছরেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে যেতে পারে নিম্ন পর্যায়ে। সেক্ষেত্রে
সরকারকেও আমদানি নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত রাখতে হতে পারে। চাপ থাকবে মূল্যস্ফীতিরও। এর ধারাবাহিকতায়
বাধাগ্রস্ত হবে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ। সব মিলিয়ে এ অর্থবছরেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ,
আমদানি, রফতানি ও বেসরকারি বিনিয়োগের মতো সূচকগুলোয় উন্নতির সম্ভাবনা তেমন একটা নেই।
হ্রাস পেতে পারে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারও।
‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস’
শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। এতে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের
সম্ভাব্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, আমদানি, রফতানি
এবং সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। দীর্ঘদিন ধরেই
দেশের অর্থনীতিকে চাপে রেখেছে মূল্যস্ফীতি। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে দেশে মূল্যস্ফীতির
হার ছিল ৯ শতাংশের ওপরে। অর্থবছরের বাকি সময়েও এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা
করছে বিশ্বব্যাংক।
দেশে মূল্যস্ফীতির হার প্রথম
৯ শতাংশের ঘর অতিক্রম করে গত অর্থবছরের মার্চে। সে সময় এর হার ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশে।
শেষ মাস জুনে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতির মধ্য দিয়ে শেষ হয় গত অর্থবছর। ২০২২-২৩
অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে। এরপর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের
প্রথম পাঁচ মাসেও মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের কাছাকাছি। এর মধ্যে জুলাইয়ে ৯ দশমিক ৬৯
শতাংশ, আগস্টে ৯ দশমিক ৯২, সেপ্টেম্বরে ৯ দশমিক ৬৩, অক্টোবরে ৯ দশমিক ৯৩ ও সর্বশেষ
নভেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশে।
রিজার্ভ সংকট এবারো দেশের সামষ্টিক
অর্থনীতির ভারসাম্যকে চাপে রাখবে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির পূর্বাভাস
অনুযায়ী, এবারো দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকবে নিম্ন পর্যায়ে। রিজার্ভের ক্ষয়
মোকাবেলায় আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত রাখতে হতে পারে সরকারকে। ফলে বেসরকারি খাতের
বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত হবে।
ডলার সংকটের কারণে চলতি অর্থবছরের
প্রথম পাঁচ মাসে দেশের আমদানি কমেছে প্রায় ২১ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী,
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে আমদানি হয়েছে ২৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার, যেখানে
এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৩২ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারের আমদানি হয়েছিল। আমদানি কমার
প্রভাব পড়েছে দেশের শিল্প খাতের প্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রেও। চলতি অর্থবছরের প্রথম
পাঁচ মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতি, শিল্পের মধ্যবর্তী পণ্য ও কাঁচামাল আমদানির জন্য ঋণপত্র
(এলসি) খোলা ও নিষ্পত্তির পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে
কমেছে। এর মধ্যে মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানির এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ কমেছে
এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে আরো
বলা হয়েছে চলতি অর্থবছরে সরকারি বিনিয়োগ পরিস্থিতি স্থিতিস্থাপক থাকতে পারে। মূল্যস্ফীতি
কমলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বাড়ার প্রত্যাশা করছে সংস্থাটি।
দেশের রফতানি পরিস্থিতি নিয়ে
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রফতানি গন্তব্যগুলো বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রত্যাশার তুলনায়
শ্লথগতির বিষয়টি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। চলতি অর্থবছরের প্রথম
প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা,
জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রধান রফতানি গন্তব্যগুলোয় বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ কমে
যাওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানেও উঠে এসেছে।
বিশ্বব্যাংকের ভাষ্যমতে, ২০২৩-২৪
অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি শ্লথ থাকবে। অর্থবছর শেষে তা দাঁড়াতে পারে ৫ দশমিক
৬ শতাংশে। এরপর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ৫ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়াতে
পারে।
নগদ অর্থের সংকটে ভর্তুকির
অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না সরকার। বকেয়া হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বিপুল অংকের
বিল। সম্প্রতি ভর্তুকির অর্থের বিপরীতে বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে দায় পরিশোধ
কিছু সময়ের জন্য বিলম্বিত করা হয়েছে। এ বন্ডের সুদ ও পুঞ্জীভূত ভর্তুকির অর্থ পরিশোধে
আরেক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার। চলতি শীত মৌসুমেই আরেক দফা বিদ্যুতের
দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক
বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে সমন্বয়ের একটি পদ্ধতি এ বছরের মার্চের মধ্যে বাস্তবায়ন
করবে সরকার। পাশাপাশি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়েও এ সময়ের মধ্যেই সিদ্ধান্ত আসবে।
খাতটিতে ভর্তুকির অংক দিন দিন বাড়ছে। এ ভর্তুকির চাপে বাড়ছে সরকারের অর্থ সংকটও। একদিকে
ভর্তুকির অর্থ পরিশোধ করা যাচ্ছে না, অন্যদিকে বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বিদ্যুৎ
খাতে ঋণ দেয়া ব্যাংকগুলো বিপাকে পড়েছে। এ অবস্থায় ভর্তুকির বিপরীতে বন্ড ইস্যু করে
আপাতত সরকারের দায়ের বিষয়টি কিছু সময়ের জন্য বিলম্বিত করা সম্ভব হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে
বন্ডের সুদ বাবদ সরকারকে অর্থ পরিশোধ করতে হবে। পাশাপাশি পুঞ্জীভূত ভর্তুকির অর্থও
পরিশোধ করতে হবে। সব মিলিয়ে এ মুহূর্তে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছে
না সরকার।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে এর
প্রভাব পড়বে সব খাতেই। বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের ওপর এর প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। এরই
মধ্যে মূল্যস্ফীতির চাপে মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। এ অবস্থায় নতুন করে বিদ্যুতের
দাম বাড়লে সেটি মূল্যস্ফীতিকে আরো উসকে দেবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন